চোখ উঠার ঘরোয়া চিকিৎসা - বাচ্চাদের চোখ উঠার ড্রপ

চোখ উঠার ঘরোয়া চিকিৎসা এবং বাচ্চাদের চোখ উঠার ড্রপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। চোখ উঠলে মানুষের শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তাদের কোন কিছু করতে ভালো লাগেনা। কিংবা হঠাৎ করে যদি আপনার চোখ ওঠার সমস্যা দেখা দেয় আপনি সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে পারবেন না। এজন্য আপনার উচিত ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে ভালো করার। 

চোখ-উঠার-ঘরোয়া-চিকিৎসা

চোখ ওঠার সমস্যা প্রায় মানুষেরাই হয়ে থাকে। বিশেষ করে শিশুদের এই সমস্যাগুলো বেশি বেশি হয়। যার কারণে একটা বাচ্চাকে ডাক্তারের চিকিৎসা না করে যদি ঘরোয়া উপায়ে ভালো করা যায় তাহলে তাদের শরীরের কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়া সম্ভাবনা থাকবে না। একটা বাচ্চার চোখ উঠলে কিভাবে আপনি ভালো করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। 

সূচিপত্রঃ চোখ উঠার ঘরোয়া চিকিৎসা করার উপায়

চোখ উঠার সময় করনীয়

বর্তমান সময়ের চোখ উঠার সমস্যা মারাত্মক কোন সমস্যা নয়। চোখ উঠলে কয়েকদিন একটু সমস্যায় থাকবেন আপনি। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়। চিকিৎসা ছাড়া যদি আপনি ঘরে উপায়ে চোখ উঠার সমস্যা সমাধান করতে পারেন। 

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি - শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

তাহলে পরবর্তীতে আপনার চোখ উঠার লক্ষণ দেখা দেওয়া সম্ভাবনা থাকবে না। কিংবা চোখ উঠলেও তেমন কোন সমস্যা হবে না আপনার। কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনি ঘরে বসে থেকে চোখ ওঠার সমস্যা সমাধান করতে পারবেন জেনে নিন বিস্তারিত। 

  • চোখ উঠালে আমরা মূলত হাত দিয়ে চোখ নাড়াচাড়া করি বেশি বেশি। যার কারণে পরবর্তীতে আরো বেশি সমস্যা হয়। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হাত সব সময় সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে রাখবেন। 

  • আপনার কাছে টিস্যু নিয়ে থাকবেন সব সময়। কারণ চোখ উঠলে চোখ দিয়ে পানি বের হয়। সেই পানিগুলো দীর্ঘ সময় নিয়ে বসে থাকা যাবে না। চোখে পানি আসা মাত্রই আপনি টিস্যু ব্যবহার করে মুছে ফেলবেন। 

চোখ উঠার ঘরোয়া চিকিৎসা 

চোখ উঠার ঘরোয়া চিকিৎসা। চোখ ওঠার সমস্যা ভালো করতে হলে প্রথমত আপনার আগে পরিষ্কারভাবে চলাফেরা করতে হবে ময়লা মাটিতে যাওয়া যাবেনা। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এছাড়াও আরো কিছু উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। 

চোখ উঠলে চোখ দিয়ে পানি পড়ে বেশিরভাগ সময়। সেই পানিগুলো হাত দিয়ে মুছবেন না। নরম পরিষ্কার কাপর কিংবা টিস্যু দিয়ে মুছো ফেলবেন। চোখ উঠা ভালো না হওয়া পর্যন্ত এই পদ্ধতি গুলো মেনে চলবেন। 

  • চোখ উঠার রোগী বাহিরে যাওয়া থেকে দূরে থাকবেন। বাইরে গেলে চোখে ময়লা মাটি কিংবা দূষিত বায়ু প্রবেশ করবে যার জন্য আপনার চোখের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। যদি গুরুত্বপূর্ণ কোন কারণে যেতে হয় তাহলে কালো চশমা ব্যবহার করবেন। তারপর বাহিরে যাবেন। 

  • নোংরা পানি থেকে দূরে থাকবেন। নিয়মিত গোসল করবেন পরিষ্কার পানি দিয়ে। চোখ উঠার সমস্যা ভালো না হওয়া পর্যন্ত কাদামাটিতে কাজ করবেন না। 

বাচ্চাদের চোখ উঠার ড্রপ কোনটা ভালো

বাচ্চাদের চোখ উঠলে যে ডক্টর ব্যবহার খুব দ্রুত বাচ্চাদের চোখ উঠার সমস্যা সে ড্রপ সম্পর্কে সকল বিস্তারিত জেনে নিন। 

  • অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। এ ড্রপ দিয়ে চোখটা সমস্যা ভালো করার পাশাপাশি চোখে দূষিত জীবাণু থাকলে মুক্ত করে দিবে। এ ড্রপটি দিনে তিন থেকে চারবার করে ব্যবহার করতে হবে। 

  • ড্রপ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চোখ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। নরম কাপর দিয়ে ভালো করে মুছে নিবেন। তারপর এক ফোটা করে ড্রপ দিবেন। 

  • এছাড়াও অ্যান্টিহিস্টামাইন ড্রাপটি ব্যবহার করতে পারেন এই ড্রপটি শিশুর জন্য অনেক নিরাপদ। এটা প্রতিদিন দুইবার করে ব্যবহার করবেন সকাল এবং বিকেল। টানা ৫ থেকে ৭ দিন ব্যবহার করলেই আপনার চোখ আস্তে আস্তে ভালো হওয়া শুরু করবে। 

বাচ্চদের ড্রপ দেওয়া যাবে কি

চোখ উঠার ড্রপে এলার্জি থাকে। অতিরিক্ত পরিমাণ ব্যবহার করলে এলার্জি বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের ব্যবহার করলে এলার্জি খুব দ্রুত বাড়ে। যাদের বয়স তিন বছর কিংবা তার বেশি তারা ব্যবহার করতে পারেন অল্প পরিমাণ। তিন বছরের নিচে ব্যবহার করলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা ২০২৫

ড্রপ ব্যবহার করা ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ দিন ব্যবহার করবেন এর বেশি অতিরিক্ত সময় ব্যবহার করবেন না। যদি বাচ্চাদের জন্য ড্রপ কিনার অবশ্যই দোকানে গিয়ে বাচ্চাদের ড্রপের কথা বলতে হবে। না হলে তারা বয়স্ক মানুষের দেওয়ার ড্রপ দিয়ে দিবে এতে আপনার বাচ্চা সমস্যা হবে। 

চোখ উঠলে কি কি খেতে হবে

চোখ উঠলে পুষ্টিকর জাতীয় খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার চোখে সতেচজ রাখতে খুব পরিমাণ সাহায্য করে। এবং আপনার দৃষ্টি শক্তি সবসময় ভালো থাকবে। খাদ্য তালিকায় যদি ভালো খাবার রাখেন। চোখ উঠলে অনেক সমস্যায় পড়ে যান আপনি। ঠিক মতো তাকাতে পারেন না। কোনো কিছু ভালো লাগবেনা। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য যেসব খাবার খাওয়া উচিত আপনার।

  • কিসমিস এবং খেজুর: এই দুটো খাবার একসাথে ভিজিয়ে খেলে আপনার চোখের মাসলের উন্নতি হবে। র‌্যাডিকেলস দূর হবে। চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করবে। তাই আমি বলব আপনার যদি চোখকে ভালো রাখতে চান। প্রতিদিন রাতে খেজুর এবং কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে খেয়ে নিবেন।

  • সবুজ শাকসবজি: চোখ উঠার লক্ষণ দেখা মাএই সবুজ শাকসবজি খাওয়া শুরু করবেন। আর যদি পারেন কাঁচা সবুজ শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। রান্না করে খাওয়ার থেকে কাঁচা খেলে চোখের জন্য বেশি উপকার হবে। 

  • কমলা: ভিটামিন সি জাতীয় ফল বেশি বেশি খাবেন। যেমন কমলা, আপেল, আমলকি, এই ধরনের ফল গুলো বেশি বেশি খাবেন। চোখকে সুরক্ষা রাখার জন্য কমলা আমাদের অনেক সাহায্য করে। 

চোখ উঠলে কি কি খাওয়া যাবেনা

চোখ উঠলে যেসব খাবার খাওয়া যাবে না তা হল: ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, পুঁইশাক, বেগুন, মিষ্টি, কদু, ডাল, শিম এবং মাংশ জাতীয় খাবার। এই খাবারগুলো আমাদের চোখের তেমন একটা উপকার করো না বরং ক্ষতি হয় করে। তাই চেষ্টা করবেন যদি কারো চোখ ওঠে এই খাবারগুলো থেকে দূরে থাকার। রান্না করার সময় যদি এই তই তরকারি দিয়ে রান্না করে।

তাহলে এগুলো রেখে আপনি শুধু তরকারি দিয়ে ভাত খাবেন। মাছ মানুষের সচরাচর একটি খাবার যেই খাবার প্রতিনিয়ত খেয়ে থাকি। চোখ উঠলে মাছ জাতীয় খাবার থেকে কিছুদিন দূরে থাকবেন। চোখের সমস্যা ভালো হলে তারপর মাছ খেলে আপনার সমস্যা হবে না। আশা করছি বুঝতে পারছেন চোখ উঠলে কোন কোন খাবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেটা।

চোখ উঠা রোগ কেমন

চোউ উঠা রোগ মূলত ছোঁয়াচে নয়। এটি ভাইরাস জনিত রোগ নয়। ভাইরাস বা কোন ব্যাকটেরিয়া যখন আক্রমণ  জনিত রোগ হলে তাকে ছোঁয়াচে রোগা বলা যেত। এটি মূলত এলার্জির কারণে হয়ে থাকে। তবে চেষ্টা করবেন বেশি মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকতে। 

এলার্জি জাতীয় খাবার গুলো গ্রহণ করা যাবেনা। এটা চিকিৎসা না করে যদি আপনি সঠিক নিয়ম গুলো মেনে চলেন তাহলে পাঁচ থেকে সাত দিনের ভিতরে এমনি ভালো হয়ে যাবে। তবে এ ধরনের রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করবেন।

চোখ উঠা সম্পর্কে আমার শেষ কথা

ইতিমধ্যে আপনি জানতে পেরেছেন চোখ উঠার ঘরোয়া চিকিৎসা এবং চোখ উঠার সময় করনীয় সম্পর্কে। আমার মতামতে যেটা ভালে হবে তা হল ৩ বছরের নিচে বাচ্চদেরকে চিকিৎসা করাবেন না। উপরে বলে দেওয়া হয়েছে ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে ভালো করবেন। এবং যাদের ৫ বছরের বেশি বয়স হয়েছে তারা চোখ উঠার সমস্যায় ভুগে থাকলে ভালো একটি ড্রপ কিনে চোখে লাগাবেন।

সর্বচ্চো ৭ দিন দিতে পারবেন তার বেশি দিলে চোখের সমস্যা হতে পারে। আর যারা বসয়কো তারা এই সমস্যায় থাকলে ডাক্তরের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিবেন তাহলে খুব দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে ভালো করলে সময়ের দরকার। আপনার কাছে যদি সময় থাকে তাহলে চিকিৎসা না করে ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে সমস্যা ভালো করুন। আজকের মতো আমি এখানেই শেষ করছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অনলাইন এক্সপার্ট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয় :

comment url