মাশরুম চাষের পদ্ধতি - মাশরুম চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয়

মাশরুম চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন। মাশরুম অনেক পুষ্টিকর খাবার। যার কারনে মাশরুমের চাহিদা রয়েছে অনেক। কিভাবে মাশরুম চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করবেন। মাশরুম এর বীজ কোথায় থেকে সংগ্রহ করবেন, মাশরুম চাষ করতে কেমন টাকা খরচ হয়। মাশরুম চাষের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলটি মনযোগ সহকারে পড়তে থাকুন

মাশরুম-চাষের-পদ্ধতি

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাকে জানাবে। মাশরুম চাষের জনপ্রিয়তা কেমন। মাশরুম চাষে কত টাকা ব্যয় করে কত টাকা আয় করতে পারবেন। কেমন জায়গায় মাশরুম চাষ করতে ফলন বেশি পাবেন। এবং মাশরুম চাষের পদ্ধতি এবং আরো বিস্তারিত জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ুন।

সূচিপত্রঃ মাশরুম চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত 

মাশরুম চাষের পদ্ধতি

মাশরুম চাষের পদ্ধতি। মাশরুম একটি উপকারি খাবার। মাশরুম চাষ করে অনেক লাভমান হতে পারবেন। কিন্তু কিভাবে চাষ করবেন সেটা আপনাকে জানতে হবে। মাশরুম চাষ করার আগে। মাশরুম চাষের যতগুলো পদ্ধতি রয়েছে সব জেনে তারপর মাশরুম চাষ করতে হবে। মাশরুম চাষ করে লাভমান হতে চাইলে। মাশরুম চাষের দুই বছর অভিজ্ঞতা থাকা লাগবে। অভিজ্ঞতা ছাড়া মাশরুম চাষ করলে আপনি লাভবান হতে পারবেন না। বরং আপনার লস হয়ে যেতে পারে। 

মাশরুম আপনি যেকোনো জায়গায় চাষ করতে পারবেন। আপনার যদি রুমে জায়গা থাকে অথবা ছাদের ওপর জায়গা থাকে সেখানেও মাশরুম চাষ করে মাকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও মাশরুম চাষ করতে পারবেন আমি বসে থেকে। এই ফসল চাষ করার জন্য গ্রাম অথবা শহর সবখানে চাষ করতে পারবেন। চলুন তাহলে এই পর্যায়ে জেনে নিন মাশরুম চাষের পদ্ধতি। 

আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি - ব্রুন দূর করতে নিম পাতা ব্যবহার

মাশরুম চাষের জন্য সর্ব প্রথমে আপনাকে ব্যাগ সংগ্রহ করতে হবে। তারপর কাঠের গুড়া,ধানের তুষ,গমের ভুষি, এগুলো সংগ্রহ করতে হবে। আপনি যে ব্যাগে মাশরুম চাষ করবেন সেই ব্যাগে আপনাকে চুন লাগিয়ে দিতে হবে। তারপর কাঠের গুড়া ধানের দোষ গমের ভুসি এগুলো মিশিয়ে ব্যাগে ভরবেন।

সঠিক মত ব্যাগে ধানের তুষ গমের ভুষি কাঠের গুড়া উঠানোর পর মাশরুমের বীজ লাগাবেন। সেই ব্যাগগুলো ঘরের মেঝেতে অথবা বাশের ঝারের উপর রাখতে হবে। সেখানে যেন আজকের তাপমাত্রা বাতাস থাকে। মাশরুমের ব্যাগ যদি আপনি সঠিক আবহাওয়ায় রাখতে পারেন তাহলে সেখান থেকে আপনি অধিক পরিমাণ ফলন পাবেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন কিভাবে চাষ করবেন এবং কোথায় চাষ করলে। ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

মাশরুম কেন চাষ করবেন

মাশরুম চাষ করার জন্য কোনো সিজন লাগেনা। আপনি চাইলে সারা বছর মাশরুম চাষ করতে পারবেন। মাশরু চাষ করার জন্য  অতিরিক্ত কোনো জায়গা জমির প্রয়োজন হয়না।আপনার বাসার ছাদে অথবা আপনার রুমের ভিতর মাশরুম চাষ করতে পারবেন। অথবা আপনার বাহিরে কোথাও জমি থাকলে সেখানে চাষ করতে পারবেন। 

ছেলে বা মেয়ে সবাই চাষ করতে পারবেন। মাশরুম চাষ করতে কেনো সার কীটনাশক ব্যবহার করা লাগেনা। কম খরচে আপনি মাশরুম চাষ করতে পারবেন। বীজ লাগানোর সময় যা লাগে গমের ভুষি, ধানের ভুষি, চুন এগুলো খরচ ছারাও সংগ্রহ করতে পারবেন। শুধু মাশরুম এর বীজ কিনার সময় যেই খরচ হবে সেটা ছাড়া আর খরচ নাই। মাশরুম চাষে অনেক সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনি চাষ করতে পারেন।

মাশরুম বীজ কোথায় পাওয়া যায়

মাশরুম বীজ কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। মাশরুম বীজ আপনি সচারাচর সব জায়গাতে পারবেন না।এর জন্য আপানাকে ভালো কোনো বাজারে দেখতে হবে বা অন্যমানের বাজার গুলোতে খুজতে হবে তাহলে পাবেন। অথবা আশেপাশের লোকদের থেকে জেনে নিতে পারেন।


কোন বাজারে পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে আলোচনা। আপনি চাইলে অনলাইন থেকেও কিনতে পারবেন। বিভিন্ন পেজে অথবা ওয়েবসাইটে মাশরুম বীজ বিক্রি করে থাকে। সেখান থেকেও ভালো বীজ কিনতে পারবেন। এবং খুব সহজে একটা জায়গা থেকে খুঁজে পাবেন সেটা হচ্ছে। দারাজ অ্যাপস থেকে কিনতে পারবেন। দারাজ অ্যাপস থেকে নিলে আপনে অনেক কম দামে কিনতে পারবেন। দারাজ অ্যাপস কিনলে বীজ দেখে যাচাই বাছাই করে কিনতে হবে। কারন বীজে ভেজাল আছে কি না সেটা দেখতে হবে । আশা করছি বুজতে পারছেন কোথাই থেকে বীজ কিনবেন এবং কোথাই থেকে কিনলে রিক্স নাই সেটাও জেনেছেন ইতিমধ্যে।

কত টাকা কেজি মাশরুম বীজ

ইতিমধ্যে আপনারা জেনেছেন মাশরুম চাষের পদ্ধতি, মাশরুম কেন চাষ করবেন, মাশরুম বীজ কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে। এবার জেনে নিন মাশরুম বীজ কত টাকা কেজি। মাশরুম বীজ সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যা ব্র্যান্ড  এবং জাত অনুসারে থাকে। যেটা বাজারে ৭৫ টাকা কেজিতে পাওয়া যায়। এবং বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দাম নিতে পারে। কেউ বেশি নিতে পারে আবার কেউ কমও নিতে পারে তবে কিনার আগে যাচাই-বাছাই করে কিনবেন মাশরুম বীজ। 

কত-টাকা-কেজি-মাশরুম-বীজ

মাশরুম চাষ করার আগে অবশ্যই আপনাকে আইডিয়া নিতে হবে কোন ধরনের মাশরুম চাষ করতে চান আপনি। এবং কোনটা চাষ করলে ভালোভাবে চাষ করতে পারবেন। তবে অনলাইনে কিনলে দাম একটু বেশি লাগতে পারে। আশা করছি বুঝতে পারছেন মাশরুম বীজ কত টাকা কেজি পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে। 

মাশরুম বিক্রি দাম কত

মাশরুম আপনি দুই ভাবে বিক্রি করতে পারবেন। এবং দুইভাবে বিক্রি করলে দুই রকমের দাম পাবেন। বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাশরুম বাজার খুচরা ও পাইকারি যাচাই বাছাই করে দেখা গেছে তাজা মাশরুম ১ কেজির দাম ২৫০-৩০০ টাকা। আর শুকনো গুড় মাশরুমের দাম ১ কেজি ১৪০০ টাকায় সচারাচর বাজারে পাওয়া যায়। 

আরো পড়ুনঃ ইতালি ভিসা আবেদন ফরম 2024 - ইতালি ভিসার আবেদন করার নিয়ম

কিন্তু যেখানে মাশরুমের চাহিদা বেশি মাশরুম পাওয়া যায় কম সেখানে তারা লাভ বেশি করার জন্য বেশি টাকায় বিক্রি করে থাকে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যেখানে চাহিদা কম এবং ওই খানে কম টাকায় কিনতে পারবেন।মাশরুম এর বাজার দর যেমন বা আসে পাশের মানুষ কে কেমন দাম দিয়ে কিনে নিচ্ছে সেগুলো দেখতে হবে ভালো করে। আপনি যদি মাশরুম কিনে ব্যবসা করতে চান।তাহলে বিভিন্ন জায়গায় যাচাই বাছাই করে মাশরুম কিনবেন। 

মাশরুম কোথায় বিক্রি করবেন

মাশরুম কোথায় বিক্রি করবেন। এবং কোথায় বিক্রি করলে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে। সেই সম্পর্কে জেনে নিন। বর্তমান সময়ে মাশরুম এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক হারে। মাশরুম বিক্রি করতে হবে ভালো ও উপযুক্ত মানের জায়গায়। যেমন ফুডের দোকানে বরো বরো হোটেলে। ওষুধের কোম্পানিতে বিক্রি করতে পারেন।

মাশরুম গুলো বেশিরভাগ খাবারের থেকে ওষুধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চাইনিজরা মাশরুম খেয়ে থাকে অধিক পরিমান। আপনার যদি বাহিরের দেশে বিক্রি করার মতো যোগাযোগ থাকে তাহলে সেখানে বিক্রি করতে পারেন। বাহিরের দেশে অনেক বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন আপনি। কারন বাংলাদেশের থেকে বাহিরের দেশের চাহিদা বেশি মাশরুম খাওয়ার দিক দিয়ে। 

মাশরুম খাওয়ার উপকারিকা 

মাশরুম খাওয়ার উপকারিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। মাশরুন অনেক পুষ্টিকর একটি খাবার। মাশরুম অনেক উপকারি খাবার হওয়ার জন্য টি প্রায় সব দেশে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। বাংলাদেশের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন দেশে মাশরুম চাষ হয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে অধিক পরিমান মাশরুম চাষ হয়।

আরো পড়ুনঃ ইন্ডিয়ান ভিসা চেক করার নিয়ম - পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ইন্ডিয়ান ভিসা চেক

বলা যেতে পারে মাশরুম একটি ওষুধি গুণের খাবার। মাশরুম একটি  ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার। এটি খাওয়ার ফলে শরীরে প্রচুর পরিমান ক্যালসিয়াম ও আয়রন বৃদ্ধি হয়। আরো আছে প্রোটিন যা আপনার শরীরের সাস্থ ওজন বাড়িয়ে দিবে। আপনার শরীরে রক্তশূন্যতা থাকলে সেই সমস্যা সমাধান হতে পারবে মাশরুম খাওয়ার ফলে। হার্টের রোগিদের জন্য মাশরুম খাওয়া উচিন।

এবং ক্যান্সারের মতো রোগ ভালো করে দিতে পারে মাশরুম। আপনার শরীরের ত্বককের সমস্যা থাকলে বা তৈলাক্ত ত্বক হলে নিয়মিত মাশরুম খেলে তৈলাক্ত দূর হয়ে যাবে। এবং আপনার ত্বককে নরম করে ফেলবে। এজন্য প্রতিটি মানুষের জন্য মাশরুম খাওয়া উচিত।

মাশরুম খাওয়ার অপকারিতা 

মাশরুম খাওয়ার অপকারিতা জানুন। ইতিমধ্যে আপনারা জেনেছেন মাশরুম চাষ করার সম্পর্কে। মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা। এখন আলোচনা করবো মাশরুম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে কথা না বারিয়ে শুরু করা যাক। মাশরুম অনেক জায়গায় একা একা হয়ে থাকে। আবার অনেকে অপরিচিত মাশরুম বুনে থাকেন। 

আরো পড়ুনঃ মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়

সেই মাশরুম গুলো মানুষের খাবারের উপযুক্ত না। কারন অপরিচিত বুনা মাশরুম বা একা একা হয়ে থাকা মাশরুম গুলো বিষাক্ত হয়ে থাকে। সেই মাশরুম গুলো একদম খাওয়া উচিত না। বিষাক্ত মাশরুম খাওয়ার ফলে যেকোনো প্রাণীর বা মানুষের মৃত্যু হতে পারে। তাই সাবধান অপরিচিত মাশরুম খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন।

মাশরুম সংরক্ষণ 

মাশরুম আপনি অনেক দিন পযন্ত সংরক্ষণ করতে পারবেন। তবে কিছু নিয়ম মানে হবে। মাশরুম তোলার পর পানি দিয়ে ধুয়ে সেটা পরের দিন ওপরের চামরা উঠিয়ে নিতে হবে। তারপর রোদে দিয়ে অথবা ইলেকট্রনিক কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করে শুকিয়ে নিতে হবে। সেই শুকনো মাশরুম গুলো মেশিন দিয়ে পাউডার করে নিতে হবে।

মাশরুম-সংরক্ষণ

তারপর আপনি বোতলে বা কোনো পটের ভিতর রেখে দিতে পারেন। এর থেকে ভালো পদ্ধতি  ব্যবহার করে পারেন। কোনো পলিথিন এর ভিতরে ঢুকিয়ে এয়ার টাইট করে আটকিয়ে রাখতে পারবেন। এভাবে রাখতে পারলে ৪-৫ মাস থাকবে।  আশা করছি এই পর্ব পড়ে কিভাবে মাশরুম সংরক্ষণ করতে হয় সেই সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

আমাদের শেষ মন্তব্য 

আজকের আর্টিকেলটি যারা শুরু থেকে শেষ পযন্ত পড়েছে। তারা অবশ্য জানতে পারছেন। মাশরুম কিভাবে চাষ করবেন,কোথায় চাষ করবেন, বীজ কোথায় পাবেন, মাশরুম কোথায় বিক্রি করলে দাম বেশি পাওয়া যায়।কোথায় থেকে বীজ কিনলে কম দামে কিনতে পারবেন , কীভাবে মাশরুম চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করবেন এবং মাশরুম চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত। মাশরুম মানুষের খাবারের জন্য কতটা উপকার এবং চাহিদা রয়েছে। প্রতিটি মানুষের জন্য মাশরুম খাওয়া কতটা জরুরি সেটা তো জানতেই পারলেন।

এখানে একটা বিষয় আমাকে ভালো লাগলো সেটা এবার আলোচনা করবো আপনার সামনে। কম খরচ করে আপনি মাশরুম চাষ করতে পারবেন। মাশরুম এর চাহিদা বেশি থাকার কারনে মাশরুম বিক্রি তে অধিক পরিমান লাভ করা যাবে। আপনার বাহিরে জমি না থাকলে রুমে অথবা সাদে মাশরুম চাষ করতে পারবেন। কোনো সার বা কীটনাশক ছারা চাষ করার সুবিধা পাচ্ছেন। এজন্য আপনি চাইলে মাশরুম চাষ করে মোটামুটি লাভ করা যাবে। আজ আমি এখানেই শেষ করতে আর্টিকেল পড়ে আপনারা কেমন উপকার পাইলেন সেটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অনলাইন এক্সপার্ট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয় :

comment url